[Getting along বা ভালো থাকা বইয়ের লেখক Amy Gallo এর অনলাইনে পাওয়া ফ্রি রিসোর্স অবলম্বনে লিখিত।]
অ্যামি গ্যালোর সংজ্ঞা অনুযায়ী কর্মক্ষেত্রে “সামলানো কঠিন” এমন ব্যক্তিত্বের প্রকার আটটি। সংক্ষেপে তা নিচে তুলে ধরা হলো:
১. নিশ্চেষ্ট এবং আগ্রাসী মনোভাবের সমবয়সী সহকর্মী → যাদের কর্মকান্ড সম্মতিসূচক মনে হয় কিন্তু সূক্ষ্মভাবে তারা অন্যদের অবমূল্যায়ন করে → তারা, সরাসরি দ্বন্দ্ব এড়িয়ে যায় এবং → বিভিন্ন সময় মিশ্র প্রতিক্রিয়া (পক্ষে-বিপক্ষে বা ভালো-মন্দ) পাওয়া যায় । |
২. অনিরাপদ বস → ক্ষুদ্র ব্যবস্থাপনা বা মাইক্রো- ম্যানেজমেন্ট করে → আপনার কর্মদক্ষতা বা সামর্থের ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসের অভাব বোধ করে এবং → প্রায়শই তাদের নিজস্ব আত্ম-সন্দেহের কারণে টিমের সদস্যদের দ্বিধাগ্রস্ত/কনফিউজ করে। |
৩. নির্যাতনকারী বা যন্ত্রণাদায়ক (টরমেন্টর) → যেখানে একজন বসের হবার কথা পরামর্শদাতা, সেখান থেকে তিনি হয়ে যান নিপীড়ক → যিনি প্রতিনিয়ত সমালোচনা করেন → আপনার কর্মদক্ষতা বা সামথের প্রতি যে সমর্থন ছিল তা প্রত্যাখ্যান করেন, → নান উপায়ে আপনার আত্মবিশ্বাস এবং ক্যারিয়ারের বৃদ্ধিকে দুর্বল করে দেন বা প্রতিবন্ধকতা তৈরী করেন। |
৪. নিরাশাবাদী (পেসিমিস্ট) → সর্বদা নেতিবাচক দিকে মনযোগী → সমাধানের পরিবর্তে সমস্যার উপর মনোনিবেশ করেন এবং → নিন্দুক দৃষ্টিভঙ্গির মাধ্যমে দলের মনোবল নষ্ট করেন। |
৫. ভিকটিম (সব সময় দোষ অন্যের ঘাড়ে চাপানো) → ক্রমাগত অন্যদের প্রতি অভিযোগ করেন → তাদের সংগ্রামের বা বর্তমান পরিথিটির জন্য নির্দ্বিধায় অন্যদের দোষারোপ করেন এবং → নিজেদের কৃতকর্মের জন্য খারাপ কিছু হলে তার দায়-দায়িত্ব নিতে চান না। |
৬. সর্ব-জ্ঞানী (নো-ইট-অল) → অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসী → অন্যদের ধারণা প্রত্যাখ্যান করেন এবং → নিজের ভুল স্বীকার না করে কথোপকথনে আধিপত্য বিস্তার করেন। |
৭. পক্ষপাতদুষ্ট (বায়াসড) সহকর্মী → সূক্ষ্মভাবে বা প্রকাশ্যে পক্ষপাত প্রকাশ পায় → কাউকে ইচ্ছাকৃতভাবে বর্জন করেন বা কারো প্রতি অন্যায্য আচরণের মাধ্যমে একটি বিষাক্ত কর্ম পরিবেশ তৈরি করে। |
৮. রাজনৈতিক চালবাজি করা সহকর্মী → কৌশলী, স্বার্থপর এবং কৌশলগত কারণে এগিয়ে যাওয়ার জন্য সম্পর্ক ভাঙেন, গড়েন এবং ব্যবহার করেন → এধরণের সম্পর্ক ব্যবহার করে নিজের অধিপতি বজায় রাখতে সচেষ্ট → এজন্য কারো সাথে সম্পর্ক ত্যাগ করতে দ্বিতীয়বার ভাবেন না। |
কিভাবে মোকাবেলা করবেন?
চলুন জেনে নিই তিনটি সবচেয়ে কঠিন ধরনের সহকর্মী এবং কীভাবে তাদের সাথে কাজ করা যায়।
১. প্যাসিভ-এগ্রেসিভ (গোপনে বাধা সৃষ্টি করা সহকর্মী)
🎙️চরিত্র:
মুখে এক বলে, কাজে আরেক করে। সরাসরি দ্বন্দ্ব এড়িয়ে চলে, কিন্তু আড়ালে ক্ষতি করার প্রবণতা থাকে। সংকেত পাঠায়, কিন্তু খোলাখুলি কিছু বলে না।
🎙️উদাহরণ:
"Office Space" সিনেমার বিল লামবার্গ।
🎙️কীভাবে সামলাবেন:
● তাদের ভয় চিনুন: এ ধরনের মানুষ সাধারণত মুখোমুখি হতে বা প্রত্যাখ্যাত হতে ভয় পায়, কিংবা নিজেকে অসহায় মনে করে।
● সরাসরি কথা বলার সুযোগ দিন: "তুমি প্যাসিভ-এগ্রেসিভ" বলার বদলে খোলামেলা প্রশ্ন করুন, যাতে তারা তাদের মতামত স্পষ্টভাবে বলতে পারে।
● আস্থার পরিবেশ তৈরি করুন: তাদের জানান যে তাদের চিন্তা ও মতামতকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে, যাতে তারা খোলামেলা হতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে।
২. অনিরাপদ বস (নিরাপত্তাহীনতায় ভোগা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা)
🎙️চরিত্র:
সবকিছু খুব কাছ থেকে পর্যবেক্ষণ করে (মাইক্রো ম্যানেজমেন্ট), নিজের সিদ্ধান্তের উপর আত্মবিশ্বাস কম থাকে, অন্যদের কাজে হস্তক্ষেপ করে এবং সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করতে চায়।
🎙️উদাহরণ:
"The Office" সিরিজের মাইকেল স্কট।
🎙️কীভাবে সামলাবেন:
● তাদের ভালো দিক তুলে ধরুন: এমন কিছু স্বীকার করুন যা তারা সত্যিই ভালো করে, যেমন ঝুঁকি বিশ্লেষণ, দলের মধ্যে ঐক্য আনা ইত্যাদি।
● তাদের উদ্বেগ কমান: প্রয়োজনীয় তথ্য আগে থেকেই দিয়ে রাখুন, যাতে তারা নিরাপদ বোধ করে এবং সন্দেহ কমায়।
● তাদের আত্মবিশ্বাস বাড়ান: নতুন পরিকল্পনার কথা বলার সময় এমনভাবে উপস্থাপন করুন, যাতে তা তাদের দৃষ্টিভঙ্গির সাথে মানানসই মনে হয়। এতে তারা কম শঙ্কিত হবে।
৩. নির্যাতনকারী (সহযোগিতার বদলে বাধা তৈরি করা মেন্টর)
🎙️চরিত্র:
মেন্টর হওয়ার কথা থাকলেও আসলে উল্টো কাজ করে। অহেতুক সমালোচনা করে, সহায়তা করতে গিয়ে আরো বিভ্রান্তি তৈরি করে, এবং আপনার আত্মবিশ্বাস নষ্ট করার চেষ্টা করে।
🎙️উদাহরণ:
"Star Wars"-এর ডার্থ ভেডার।
🎙️কীভাবে সামলাবেন:
● তাদের সফলতায় আগ্রহ দেখান: তাদের লক্ষ্য বুঝে নিন এবং এমনভাবে নিজেকে উপস্থাপন করুন যেন আপনি তাদের প্রতিদ্বন্দ্বী নন, বরং সহায়ক।
● পেশাদার মনোভাব বজায় রাখুন: আবেগপ্রবণ না হয়ে ধৈর্য ধরুন, কথোপকথন সংরক্ষণ করুন, এবং প্রয়োজনে নির্ভরযোগ্য সহকর্মীদের সমর্থন নিন।
● বিকল্প মেন্টর খুঁজুন: কর্মক্ষেত্রে অন্য এমন কাউকে খুঁজুন, যিনি সত্যিকার অর্থে আপনার উন্নতিতে সাহায্য করতে চান।
🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷